বাউফল প্রতিদিন ডট কম

বাউফলের কথা বলে

বদলির দেড় মাসেই স্বাচিপ নেতা এলেন পছন্দের জায়গায়! সমালোচনার ঝড়

বাউফল প্রতিদিন ডেস্ক :

ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার দোষর ও স্বাচিপের আজীবন সদস্য ডাঃ প্রশান্ত কুমার সাহা (কোড-১১২৭২২)পটুয়াখালী বাউফল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে বদলির পর ১মাস ১৩ দিনের মাথায় আবার ফিরে এলেন পছন্দের জায়গায় ! আর ছাত্রজনতার নতুন এই স্বাধীন বাংলাদেশে এমন ঘটনার জন্ম দেয়ায় সমালোচনার ঝড় বইছে সব মহলে।

আজ বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) তাকে সিলেটের জৈন্তাপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে বদলি করে পটুয়াখালী মির্জাগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বদলি করা হয়েছে। এর আগে ৫ ফেব্রুয়ারি ওই সাচিব নেতাকে বাউফল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বদলি করা হয়।

ডাঃ প্রশান্ত কুমার সাহা ৩০ জুলাই ২০১৮ সালে বাউফল উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবারপরিকল্পনা কর্মকর্তা হিসাবে বাউফল স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যোগদান করেনে। প্রায় ৭ বছর বহালতবিয়তে থেকে চাকরী করেছেন। বাউফল হলো তার শ্বশুর বাড়ি। ডাঃ প্রশান্ত কুমার পিকে সাহাবে নিয়ে দৈনিক জনকণ্ঠে একটি সংবাদ প্রকাশের পর গত ৫ ফেব্রুয়ারি তাকে সিলেটের জৈন্তাপুরে বদলি করা হয়। (স্মারক নং ৪৫.০১.০০০০.০০৪.২৫.০০৩.২৫.১৭.১৯৫ তারিখ ২/৫/২০) ওই বদলির আদেশে স্বাক্ষর করেন ডাঃ এবিএম আবু হানিফ পরিচালক প্রশাসন (চলতি দায়িত্ব) স্বাস্থ্য অধিদপ্তর মহাখালি।

একই ব্যক্তি স্বাক্ষরিত অপর এক চিঠিতে আজ বৃহস্পতি বার( ২০ মার্চ) ডাঃ প্রশান্ত কুমার সাহাকে পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলা বদলি করা হয়। (স্মারক নং ৪৫.০১০০০০.০০০.০০৪.২৫.০০০৩.২৫.৩৬.৩৫৭ তারিখ ২০/০৩/২৫)

ডাঃ প্রশান্ত কুমার সাহা বাউফলে চাকরীকালিন সময় আওয়ামী লীগের দোষর হিসাবে পরিচিত ছিলেন। তিনি আওয়ামী লীগ সমর্থীত ডাক্তারদের পেশাজীবি সংগঠন স্বাধীনতা চিকিৎসা পরিষদের আজীবন সদস্য।

বাউফলে চাকরীকালিন সময় তার বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও দুনীতিতে জড়িয়ে পরেন। তিনি কোভিড-১৯এর অর্থ লোপাট করেন। প্রশাসনিক কর্মকর্তা হিসাবে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের তদারকির দায়িত্ব থাকলেও তিনি নিজে অফিস কক্ষে বসে রোগী দেখতেন এবং ভিজিট নিতেন। এ ছাড়াও তিনি বাইরে একডি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে চেম্বার করতেন। এছাড়া তিনি তার নিজ উপজেলা উজিরপুরে সপ্তাহের দুই দিন সোমবার ও মঙ্গলবার চেম্বার করতেন। অথচ তার কর্তৃপক্ষের নির্দেশ ছাড়া কর্মস্থল ত্যাগের কোন সুযোগ নেই।

ডাঃ প্রশান্ত কুমার সাহার স্ত্রী-সন্তরা বরিশালে থাকেন। তাই প্রশান্ত কুমার সাহা রাতে কর্মস্থলে অবস্থা না করে বরিশালে স্ত্রী –সন্তানদের কাছে চলে যেতেন। তিনি পছন্দের লোকদের হাসপাতালের খাবার পরিবেশনের টেন্ডার পাইয়ে দিতেন। স্থানীয় এমপি, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক চিফ হুইপ আসম ফিরোজের সাথে (বর্তমানে তিনি কারাগারে রয়েছেন) তার ছিল দারুন সখ্যতা । হাসপাতালে স্বাস্থ্য কমিটিতে আওয়ামী লীগ সমর্থীত ব্যক্তিদের স্থান দিতেন।

ঘনিষ্ট একটি সূত্র জানায়, সিলেটের জৈন্তাপুর থেকে ডাঃ প্রশান্ত কুমার সাহার অন্যতম কারণ হলো পটুয়াখালীর বাউফলে তার শ্বশুর বাড়ি ও তার পছন্দের ডায়াগনস্টিক সেন্টার। তিনি ইচ্ছে করলেই প্রতিদিন মির্জাগঞ্জ থেকে এসে চেম্বার করতে পারবেন। এছাড়া তিার গ্রামের বাড়ি উজিরপুরে সপ্তাহে দুই দিন চেম্বার করতে পারবেন। সর্বশেষ তার স্ত্রী-সন্তান বরিশালে থাকে সেখানে তিনি রাতযাপন করতে পারবেন। এই কারণে তিনি জোড়ালো তদবির করে পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জে বদলি হয়েছেন। যা সিলেটের জৈন্তাপুর থেকে এসে করা সম্ভব ছিলনা।

একমাস ১৩ দিনের মাথায় ডাঃ প্রশান্ত কুমার সাহা ওরফে পিকে সাহার বদলির খবর বাউফলে ছড়িয়ে পরলে অনেকে মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া পরিলক্ষিত হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *