বাউফল প্রতিদিন ডট কম

বাউফলের কথা বলে

লোহালিয়া-কালাইয়া সড়ক খানাখন্দে ভরা, দুর্ভোগ

এম.এ হান্নান

বাউফল উপজেলার জেলা শহরের সঙ্গে যোগাযোগের প্রধান সড়ক লোহালিয়া-কালাইয়া সড়ক। ব্যস্ততম ৩০ কিলোমিটার সড়কের প্রায় ৮ কিলোমিটার জুড়ে খানাখন্দে ভরা। বেহাল এ সড়কে ঝুঁকি নিয়ে চলছে যানবাহন। এতে প্রায় ঘটছে দুর্ঘটনা। সড়কটি দ্রুত সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন দুর্ভোগের শিকার পথচারী যাত্রী, বিভিন্ন যানবাহনের চালকসহ স্থানীয়রা।

স্থানীয়রা জানান, জেলা শহরে যোগাযোগের প্রধান সড়ক লোহালিয়া-কালাইয়া সড়ক। গলাচিপা ও দশমিনা থেকে ঢাকাগামী যাত্রীবাহী ও পণ্যবাহী পরিবহনও এই সড়কে চলাচল করে। গুরুত্বপূর্ণ ব্যস্ততম এ সড়কে প্রতিদিন হাজার হাজার পরিবহন চলাচল করে। দীর্ঘদিন সংস্কার না করায় বাউফলের পূর্ব বাহির দাশপাড়া থেকে পূর্ব নওমালা পর্যন্ত ৮ কিলোমিটার সড়কের কার্পেটিং উঠে গেছে।

সড়কজুড়ে সৃষ্টি হয়েছে অসংখ্য খানাখন্দ। এতে যানবাহন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। দুর্ঘটনায় হতাহতের ঘটনাও ঘটেছে। শুষ্ক মৌসুমে ধুলাবালি ও বর্ষা মৌসুমে কাদা পানিতে নাকাল যাত্রী, পথচারী ও পরিবহন চালকরা। সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগের শিকার হতে হয় নারী, শিশুদের। সবচেয়ে বেশি ভোগান্তি পোহাতে হয় রোগী ও তার স্বজনদের। সড়কটি সংস্কারের জোর দাবি সবার।

বাউফল সরকারি কলেজের প্রভাষক বাদল দাস বলেন, ‘সড়কটি একদিকে উপজেলার সঙ্গে জেলার অন্যতম প্রধান সড়ক, অপরদিকে উপজেলা শহরের সঙ্গে দাশপাড়া, নওমালা ও আদাবাড়িয়া ইউনিয়নের যোগাযোগেরও প্রধান সড়ক। দীর্ঘদিন সড়কটি বেহাল অবস্থায় থাকায় সাধারণ মানুষ, পথচারী, যাত্রী, রোগী ও যানবাহন চালকরা চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছে।

কালাইয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা আইনজীবী মোহাম্মাদ আলী বলেন, সড়কে খানাখন্দে ভরা। খুবই ভয়াবহ অবস্থা। প্রায়ই এই সড়কের দুর্ঘটনা ঘটছে। তারপরও পেশাগত কারণে ঝুঁকি নিয়ে এই পথে চলাচল করি। শুষ্ক মৌসুমে সড়কে প্রচুর ধুলাবালি হয়। নাকে রুমাল ছাড়া চলাচল করা যায় না। আর সামান্য বৃষ্টি হলে খানাখন্দে পানি জমে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। সড়কটি দ্রুত সংস্কার করা হোক।

জেলা শহরের বাসিন্দা ব্যবসায়ী এনামুল হক বলেন, ব্যবসায়িক কাজে মালামাল নিয়ে বাউফল যেতে চরম ভোগান্তির শিকার হতে হয়। সড়কের খানাখন্দের জন্য যানবাহন ধীরগতিতে চালাতে হয়। অনেক সময় দুর্ঘটনায়ও পতিত হয়। এতে ব্যবসার অনেক ক্ষতি হচ্ছে। সড়কটি দ্রুত সংস্কার দরকার।

পটুয়াখালী সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী মো. সায়েম আহমেদ বলেন, ‘সড়কটি দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার হয় না। যার কারণে সড়কের কোনো অস্তিত্ব নেই বললেই চলে। পুরো সড়কের কার্পেটিং উঠে গেছে। বৃষ্টি হলেই সড়ক পরিণত হয় ডোবা-নালায়। কাদা পানিতে চলাচলে চরম ভোগান্তির শিকার হতে হয়। বিশেষ করে নারী ও শিশুরা বেশি ভোগান্তির শিকার হচ্ছে।

মো. আলামিন নামে এক ট্রাকচালক বলেন, ‘পুরো সড়ক ভাঙা। বিভিন্ন জায়গায় বড় বড় গর্ত হয়ে আছে। স্বাভাবিকভাবে গাড়ি চালানো যায় না। বিভিন্ন সময়ে দুর্ঘটনাও ঘটছে। এ ছাড়া ভাঙা সড়কের কারণে আমাদের গাড়ির ক্ষতি হচ্ছে।

মোটরসাইকেল চালক মো. রিয়াজ বলেন, এ সড়কে পাঁচ শতাধিক চালক ভাড়ায় মোটরসাইকেল চালান। ভাঙা রাস্তায় মোটরসাইকেল চালানো অনেক ঝুঁকি। বড় বড় গর্তে গাড়ির চাকা আটকে যায়। যার কারণে যাত্রীরা মোটরসাইকেলে চড়তে চান না। এতে আমাদের আয় কমে গেছে। সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।

উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) সূত্রে জানা গেছে, পটুয়াখালীর লোহালিয়া-কালাইয়া সড়কের দৈর্ঘ্য প্রায় ৩০ কিলোমিটার। সড়কের কাশিপুর অংশের তিন কিলোমিটার সড়ক সংস্কার চলছে। নওমালা-দাশপাড়া অংশে প্রায় ৭ দশমিক ৫৬ কিলোমিটার সড়কে খানাখন্দ সৃষ্টি হয়েছে।

এলজিইডির উপপ্রকৌশলী আলী ইবনে আব্বাস বলেন, ‘দীর্ঘদিন সংস্কার না করায় সড়কের কাপের্টিং উঠে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। সরেজমিনে সড়কের ভাঙা অংশ মেপে নির্ধারণ করেছি। প্রতিবেদন উপজেলা প্রকৌশলীর দপ্তরে জমা দিয়েছি।

উপজেলা প্রকৌশলী শ্যামল কুমার গাইন বলেন, ‘সংস্কারের জন্য ঊধ্বর্তন কর্তৃপক্ষের কাছে তালিকা পাঠানো হলেও তা পাস হয়নি। পুনরায় অতি গুরুত্বপূর্ণের তালিকায় সড়কটির নাম পাঠানো হবে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *