বাউফল প্রতিদিন ডট কম

বাউফলের কথা বলে

বাউফলে প্রেমিকার গহনা নিয়ে উধাও প্রেমিক, অতঃপর..

বাউফলে বিয়ের দাবিতে প্রেমিক সাইফুল মোল্লা (২৫) নামের এক যুবকের বাড়িতে অনশন করছেন এক কিশোরী। শুক্রবার (৪ অক্টোবর) রাত ১০টার দিকে ওই কিশোরী তার প্রেমিকের বাড়িতে অনশন শুরু করেন।

এদিকে অভিযুক্ত প্রেমিক সাইফুল কিশোরীর গহনা ও নিজ পরিবারসহ পালিয়ে গেছেন। উপজেলার কালাইয়া ইউনিয়নের সৌলা গ্রামের তারের পোল সংলগ্ন মোল্লা বাড়ির আহম্মেদ মোল্লার ছেলে অভিযুক্ত সাইফুল মোল্লা।

ভুক্তভোগী কিশোরী জানান, তিনি ওই গ্রামেই নানা বাড়িতে থাকে। স্থানীয় হাসান সিদ্দিক মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পড়েন। তার বাবা-মা ঢাকায় গার্মেন্টসে চাকরি করে। সাইফুল মোল্লার সাথে দীর্ঘদিন তার প্রেমের সম্পর্ক ছিলো। বিষয়টা জানাজানি হলে ভুক্তভোগী ওই কিশোরীকে তার মামা মারধর করে। পরে প্রেমিক সাইফুল তাকে কিছু টাকা ম্যানেজ করতে বলে এবং পালিয়ে বিয়ে করার আশ্বাস দেয়। কিছুদিন আগে তিনি মায়ের শেষ সম্বল সামান্য গহনা প্রেমিকের হাতে তুলে দেয়।

শুক্রবার দুপুরে তারা পালিয়ে যাওয়ার উদ্দ্যেশ্যে দুইটি মোটরসাইকেল করে এলাকা ত্যাগের চেষ্টা করা সময় মামার হাতে ধরা পড়ে। পরবর্তীতে লোক লজ্জার ভয়ে তার নানা তাকে ঘরে তুলতে অস্বীকৃতি জানায়। তখন স্থানীয় ইউপি সদস্য তাকে চৌকিদারের বাসায় রাখতে বলে। সন্ধ্যা সাতটার মধ্যে বিষয়টা সমাধানের কথা ছিলো।

কিন্তু দুপুর ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত তিনি চৌকিদারের বাড়িতে থাকলেও কোনো সমাধান হয়নি। রাত বেশি হওয়ার পরে চৌকিদার আর তাকে ঘরে রাখতে চায় না। নানা তাকে ঘরে তুলবে না, তাই তিনি প্রেমিকের বাড়িতে বিয়ের দাবিতে অনশন করছে। ঘরের মধ্যে তারা কেউ নেই। প্রেমিককে খুঁজে না পেলে, তার যাওয়ারও কোনো জায়গা নেই।

এ বিষয়ে চৌকিদার বাবুল জানান, মেম্বার (জালাল মোল্লা) তাকে বলেছে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত বাসায় রাখতে, এর মধ্যে সে সমাধানের ব্যবস্থা করবে। ৭টার পরে মেম্বার তাকে বলেন, ইউএনও স্যার তাকে পরামর্শ দিছেন, মেয়েকে পরিবারের কাছে পৌঁছে দিতে। কারণ মেয়ে প্রাপ্তবয়স্ক না। আমি মেয়েকে নেয়ার জন্য তার পরিবারকে বিষয়টি জানিয়েছি। ছেলের পরিবারের কারো সাথে যোগাযোগ করতে পারিনি।

এ বিষয়ে কিশোরীর নানা বলেন, আমার মানসন্মান যা যাওয়ার গেছে। ছোট বেলা থেকে তাকে লালন পালন করে বড় করার শাস্তি পেয়েছি। যে যেথায় ইচ্ছা যাক, আমি কিছু জানি না।

স্থানীয় ইউপি সদস্য জালাল মোল্লা গণমাধ্যমকে বলেন, সাইফুল ইসলাম আমার ভাতিজা হলেও তার পরিবারের সাথে আমার দীর্ঘদিন কোনো সম্পর্ক নেই। মেয়ে যেহেতু প্রাপ্তবয়স্ক হয়নি এখনো তাই প্রশাসনকে না জানিয়ে বিয়ে দেয়াও অসম্ভব। আমরা চেয়েছিলাম স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিকে নিয়ে বসে প্রাথমিক সমাধান করে, প্রাপ্তবয়স্ক হলে বিয়ের ব্যবস্থা যেনো নিশ্চিত হয় তেমন একটা সিদ্ধান্ত নিতাম। কিন্তু বসার জন্য ছেলেসহ তার পরিবারের কাউকেই খুঁজে পাচ্ছি না। গ্রামের কেউ দায়িত্ব নিচ্ছে না, আমি কিভাবে সমাধান করবো।

এ বিষয়ে জানার জন্য ঘটনার দিন রাতে থানায় গেলে ওসিকে পাওয়া যায়নি। তবে ডিউটি অফিসার জানান, পুলিশ কোন অভিযোগ পায়নি। তাই ঘটনা না জেনে তারা মন্তব্য করতে পারেন না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *