শিক্ষার্থীদের হাতে হেনস্তার ভয়ে বিদ্যালয়ে যাচ্ছেন না বাউফল উপজেলার কালাইয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফেরদৌসি শিরিন। গত দুইদিন ধরে তিনি অনুপস্থিত রয়েছেন বিদ্যালয়ে। তাকে জোর করে পদত্যাগ করাতে একটি পক্ষ উঠে পড়ে লেগেছে বলে জানা গেছে।
অভিযোগ রয়েছে, বিদ্যালয়ে সিনিয়র সহকারী শিক্ষক মো. ইউসুফ কিছু শিক্ষার্থীকে ভুল বুঝিয়ে আন্দোলনের ইন্ধন দিচ্ছেন।
সূত্রে জানা যায়, গত শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) বিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসের বাইরে মানববন্ধনসহ বিক্ষোভ মিছিল করে। মিছিলটি বিদ্যালয়ে প্রবেশ করে কয়েকটি শ্রেণি কক্ষ ভাঙচুর করে। এরপর মিছিলটি কালাইয়া হায়াতুন্নেচ্ছা বালিকা বিদ্যালয়ের গেট ভেঙে শ্রেণি কক্ষে ঢুকে কয়েকজন শিক্ষার্থীকে নিয়ে আবারও মিছিল বের করে।
শিক্ষার্থীদের দাবি প্রধান শিক্ষক একজন দুর্নীতিবাজ, তার অবহেলায় গত ১২ মে বিদ্যুতায়িত হয়ে বেল্লাল হোসেন নামে ১০ম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। এসব ঘটনায় তারা প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগ দাবি করছে।
গেট ভাঙার ঘটনা স্বীকার করে কালাইয়া হায়াতুন্নেচ্ছা বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. হারুন অর রশিদ বলেন, ‘বিষয়টি আমরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবহিত করেছি।’
এদিকে আন্দোলনে ইন্ধন দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে কালাইয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সিনিয়র সহকারী শিক্ষক মো. ইউসুফ সাংবাদিকদের কাছে বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের সকল দাবি যৌক্তিক। প্রধান শিক্ষক পকেট কমিটি দিয়ে প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করছেন।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিদ্যালয়ের এক শিক্ষক বলেন, ‘বিদ্যালয়ের ১৭জন সহকারী শিক্ষকের মধ্যে ১৬ জন শিক্ষকই প্রধান শিক্ষকের পক্ষে। একজন সিনিয়র শিক্ষক হিসেবে তিনি (মো. ইউসুফ) যা করতেছেন তা মোটেই কাম্য না।’
প্রধান শিক্ষক ফেরদৌসি শিরিন বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে যদি অনিয়মের কোনো অভিযোগ থাকে তাহলে সংশ্লিষ্ট দপ্তর তদন্ত করুক। বেল্লাল বিদ্যুতায়িত হয়ে মৃত্যুর ঘটনায় আমার কোনো দায় ছিল না। কারণ বিদ্যালয়ের মেইন গেটের সামনে স্থানীয় প্রভাবশালীরা দোকান ঘর ভাড়া দিয়েছেন। আমার কোনো প্রকার অনুমতি না নিয়েই স্কুলের ছাদে ডিশ এ্যান্টেনা বসিয়েছে। স্কুল চলাকালীন ছাদে উঠে ওই এ্যান্টেনার বিদ্যুৎ সংযোগ কৌতূহল বশত বেল্লাল ধরতে গিয়ে বিদ্যুতায়িত হয়ে মারা যায়। এতে আমার দায় কোথায়। এরপরও বেল্লালের দাফনসহ সকল কাজ সম্পন্ন করার জন্য বিদ্যালয় থেকে তার পরিবারকে ৩০ হাজার ৫শ’ টাকা দেয়া হয়েছে।’
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বশির গাজী বলেন, কোনো শিক্ষককে হেনস্তা করার সুযোগ নেই। বিষয়টি আমরা গুরুত্বসহকারে দেখছি।’
Leave a Reply